ফেনীতে সোনালী ব্যাংকের দুটি শাখা থেকে এক কর্মকর্তার ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ

(১৭ ডিসেম্বর ২০১২):: ফেনীতে সোনালী ব্যাংকের সোনাগাজী শাখা ও ফেনীর ইসলামপুর রোড শাখা থেকে মিজানুর রহমান নামে একজন জুনিয়র কর্মকর্তা আমানতকারীদের ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাংকের প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলেও কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। বিষয়টি জানাজানি হলে সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখা ব্যবস্থাপক রহিম উল্যাহ খোন্দকার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও প্রভাবশালী মহলের চাপে পুলিশ এখনো মামলা হিসাবে রেকর্ড করেনি।
ব্যাংক সুত্রে জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের সহকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সোনাগাজী শাখার কর্মকলীন সময় আমানতকারী গ্রাহকদের ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার আগে তিনি ফেনীতে সোনালী ব্যাংক ইসলামপুর রোড শাখায় থাকাকালীন সময় গ্রাহকদের দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি আমানতকারী গ্রাহকদের টাকা ছাড়াও জেলা ও উপজেলা পরিষদের নামে ইস্যু করা বিভিন্ন পে-অর্ডার, ব্যাংক ড্রাফটের টাকাও ভূঁয়া একাউন্ট খুলে আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ফেনীর ফুলগাজী শাখায় চাকুরীকালীন সময়ও আমানতকারীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। মিজানুর রহমান ফেনীর ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত হাবিবর রহমানের ছেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী সোনালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, ফেনীর ইসলামপুর রোড শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী শুধুমাত্র নিজেদেরকে রক্ষা করতে মিজানুর রহমানের আত্মসাতকৃত দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা নিজেরা পকেট থেকে পরিশোধ করলে আত্মসাতকারী কর্মকর্তা সহজে পার পেয়ে যায়। ফুলগাজী শাখায়ও তিনি একই কায়দায় পার পেয়ে যান। কিন্তু সোনাগাজী শাখায় আত্মসাতকৃত টাকার অংক ২১ লাখ হওয়ায় এত টাকা সেখানকার কর্মকর্তা কর্মচারীদের পক্ষে পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংক কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, মিজানুর রহমান ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় চাকুরীর সময় বর্তমান সরকার সমর্থিত সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন একাংশের একজন কেন্দ্রীয় নাম ব্যবহার করে প্রভাব খাটাতেন। তিনি ঢাকার বিভিন্ন শাখায় চাকুরীকালীন সময়ও গ্রহকদের টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সে কারনে তাকে ঢাকা থেকে বদলী করে ফেনী নিজ জেলার পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সোনালী ব্যাংক ফেনী অঞ্চলের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোঃ সেলিম হোসেন ব্যাংকের সোনাগাজী শাখা থেকে মিজানুর রহমানের ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা স্বীকার করে এঘটনায় শাখা ব্যবস্থাপক রহিম উল্যাহ খোন্দকার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেছেন বলে জানান। তবে তিনি ব্যাংকের ইসলামপুর রোড শাখার ব্যাপারে কিছু না বললেও ফুলগাজীতে অনুরুপ ঘটনায় অন্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা আত্মসাতকৃত টাকা শোধ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নবীর হোসেন জানায়, তিনি স¤প্রতি সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখা ব্যবস্থাপকের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হবে। দুদকই তদন্ত করে মামলা হিসাবে রেকর্ড করবে। এছাড়া সোনালী ব্যাংক মহিপাল শাখায় এসএমই ও উন্মেশষ নাময়ি দু’টি ঋণ প্রকল্পে বিভিন্ন ভূয়া নামে প্রায় ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের খবর পাওয়া গেছে।

-->