ফেনী ফতেহপুর রেলক্রসিং ডিভাইডার যেন মরণফাঁদ!

(০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২):: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী বাইপাস সড়কের ফতেহপুর রেলক্রসিং ডিভাইডারটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। পথচারীদের অভিযোগ, রাতের আঁধারে ডিভাইডার চোখে দেখা যায় না। এতে গত বছরে রেলক্রসিং ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে কমপক্ষে দু'শতধিক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে । এতে নিহত হয়েছে প্রায় ৫০ যাত্রী। আহত ও পঙ্গু হয়েছে পাঁচ শতাধিক। ফেনী হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মাহফুজুল করিম জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাতে ট্রাক ও নাইটকোচের চলাচল বেড়ে যায়। এ সড়কে প্রতিরাতে কমপক্ষে পাঁচ হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে। ফলে প্রচণ্ড চাপে থাকতে হয় চালকদের। আবার রাতে লরি, ট্রাক ও নাইটকোচ বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে থাকে; কিন্তু ফেনীর ফতেহপুর রেলক্রসিংয়ে অবস্থিত সড়ক বিভাগের রোড ডিভাইডারটি রাতে সাধারণ দৃষ্টিতে চোখে পড়ে না। প্রায় ১০০ গজ লম্বা ডিভাইডারে কোনো রিফ্লেক্টিং রং করা হয়নি। আবার এলাকাটি রাতের বেলায় অন্ধকার থাকায় চালকরা অসতর্কভাবে এসে ডিভাইডারের ওপর আছড়ে পড়ে অথবা ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে প্রায় প্রতিরাতেই দূর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় হতাহত হয় অনেক বাসযাত্রী ও চালক। এ পথের বাসচালক আলী আহাম্মদ জানায়, দিনে সীমিত দুর্ঘটনা ঘটলেও রাতে ফতেহপুর ডিভাইডার হয়ে যায় ভয়ঙ্কর। তিনি জানান, যেসব গাড়িচালক সচরাচর এ সড়কে আসেন না, তারা এ ডিভাইডারের অবস্থান সম্পর্কে অবগত থাকে না। জানা না থাকার কারণে তারাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ফেনী হাইওয়ে পুলিশের হিসাব মতে, গত দু'বছরে এখানে কমপক্ষে শতাধিক বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কার দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৫০ যাত্রী ও চালকের মৃত্যু হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ফতেহপুর রেলক্রসিং এলাকা পুলিশের খাতায় দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। রাতে পুলিশ টহল দলকে এ এলাকার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়। এলাকার নূরুল ইসলাম জানান, প্রায় প্রতি রাতেই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। সব দূর্ঘটনার মূলে রয়েছে রোড ডিভাইডার। হাইওয়ে পুলিশ রিফ্লেস্টিং রঙের পাশাপাশি ডিভাইডারের উচ্চতা বাড়ানো হলে দুর্ঘটনা কমে যাবে বলে জানিয়েছে। ফেনীর পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ জানান, কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত কোনো রোড ডিভাইডার নেই। এ সড়কের নতুন চালকরা রাতে ফ্রি স্টাইলে গাড়ি চালাতে গেলে এবং ডিভাইডারে কোনো রং না থাকায় বিপত্তি ঘটে। তিনি আরও জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগকে তিনি রিফ্লেক্টিং কালার করে দেওয়ার জন্য বার বার চিঠি দিয়েছেন কিন্তু রং করা হচ্ছে না।