(২৯ মে ২০১১)ফেনীতে ফলের চাহিদা দেশের অন্য জেলার তুলনায় একটু বেশি। মধু মাস এলেতো কথাই
নেই। সর্বত্রই ফল খাওয়ার ধুম। ট্রাংক রোড ও মহিপালের দৃশ্য দেখলে মনে হয়
যেন ফল উৎসব চলছে। মৌসুমী ফলের মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস ছাড়াও
বাজারে কলা, আঙ্গুর, আপেল, ডালিম, আতা, পেপে, বেল, ডাবসহ বিভিন্ন ফল পাওয়া
যাচেছ। অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে কাঁচা ফলকে বিষাক্ত কেমিক্যালের মাধ্যমে
পাকিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানান,কৃত্রিমভাবে পাকানো এবং রং করা
এসব ফলমূল খেলে কিডনি ও ক্যান্সার ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। কেমিক্যাল
ছাড়াও আরো কয়েকটি উপায়ে ফল পাকানো হয়। অপরিপক্ব কলা পাকাতে ব্যবহার করা হয়
এক ধরনের বিষাক্ত কেমিক্যাল। কলা পাকানো হয় কোন একটি বদ্ধ ঘরে। সেখানে
আলো-বাতাস বন্ধ রেখে গরম করার জন্যে বেশি পাওয়ারের বাল্ব জালিয়ে দেয়া হয়।
আর তাতেই এক দিনের মধ্যে কলা পেকে যায়। আনারসের রং করার জন্য এক ধরনের
কেমিকেল সেপ্র করা হয়। এসব ফল যাতে তাড়াতাড়ি না পচে সে জন্য ফরমালিন মিশিয়ে
রাখা হয়। কোনভাবে বোঝা যায় না এগুলো কৃত্রিম ভাবে পাকানো হয়েছে। শহরের পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টারের মিলন নামের এক ক্রেতা জানালেন, টসটসে পাকা ফল বাসায় নিয়ে সাতদিন রাখলেও পচন ধরে না। অথচ গাছপাকা ফল দু’এক দিনেই পচন ধরে। ফলমূল ছাড়াও বাজারের শাকসবজি,টমেটো, কচু, লাউসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজিতেও কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্রেতারা স্বীকার করেন। আপেল,কমলাসহ আমদানী করা ফলে দেয়া হয় কীটনাশক ওষুধ। আর এসব খেয়ে কিডনি সমস্যা বাড়ছে।
ট্রাংক রোডের এক কলা ব্যবসায়ী জানান,আমাদের দেশে কলা বারোমাসি একটি ফল। অথচ এটা পাকাতে ব্যবহার করা হয় কার্বাইড,ইথোফেনসহ নানা ধরনের কেমিক্যাল। এছাড়া গাছের কলা বড় করতে ইথোফেন ছাড়াও মোচা কেটে ইউরিয়া সার বেঁধে দেয়া হয়। কেউ কেউ আবার কলা পাকাতে সালফেটসহ বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে থাকেন। এতে কলার উপরিভাগ পাকা মনে হলেও ভেতর থাকে সম্পূর্ণ কাঁচা। অনেক সময় এসব কলা খেলে সঙ্গে সঙ্গে গলা চুলকায়। এছাড়া আঙ্গুর যাতে দু্রত না পচে এ জন্য ফরমালিন মেশানো বালতিতে ডুবিয়ে নেয়া হয়। ফলে দু’এক সপ্তাহে কোন সমস্যা হয় না।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,বর্তমানে ফলমূল বা শাকসবজিতে যেসব বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে তা স্বাস্থ্যর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ফলে দিনে দিনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। তার মতে,ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহৃত আম,কলা ও আনারস খেলে মানব দেহে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।ফেনী পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ শাহজাহান বলেন,আমরা এসবের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।
