চার বছরের নিজ শিশু কন্যাকে সৎ মায়ের সহযোগীতায় বাসার ভিতরে আটকে রেখে
ব্লেড দিয়ে গায়ের বিভিন্ন স্থান কেটে ফেলে,গরম খুন্তি দিয়ে আঘাত করে ও ঘরের
দেয়ালের সাথে মাথা আছড়ে মেরে মারাত্মকভাবে আহত করেছে পিতা নামের এক পাষন্ড
ও তার স্ত্রী। মঙ্গলবার বিকেলে ফেনী শহরের এসএসকে রোডের ডাক্তার পাড়াস্থ
জাপানী বিল্ডিংয়ে এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশে
খবর দেয়।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সুত্রে জানাযায়,ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের
মঠবাড়ীয়া এলাকার মকবুল আহম্মদের ছেলে জিয়া উদ্দিন ২০০৪ সালে প্রেম করে একই
এলাকার নাজমা আক্তারকে বিয়ে করে। দুই বছর পর জন্ম নেয় কন্যা নাঈমা আক্তার
জুলি(৪)। স্ত্রী নাজমা আক্তার তাকে নির্যাতনের অভিযোগ এনে স্বামী জিয়া
উদ্দিনের বিরুদ্ধে ফেনীর আদালতে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় জিয়া উদ্দিন ২৬
দিন জেল হাজত খেটে জামিনে বের হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে জিয়া উদ্দিন আরো
দুটি বিয়ে করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে তার আগের সংসারের মেয়ে জুলিকে মারধর করলে পাশ্ববর্তী
ভাড়াটিয়া বাহার মিয়া ও বাসার মালিক নুরুল আমিন দরজার তালা ভেঙ্গে ভিতরে
প্রবেশ করে শিশুটিকে উদ্ধার করে। উদ্ধার অবস্থায় শিশুটির গায়ে আঘাতের চিহ্ন
পাওয়া গেছে। জুলি জানায় -তাকে লোহার খুন্তি দিয়ে আঘাত করায় তার গায়ে জ্বর
আসে। এ সময় প্রচন্ড জ্বরে শিশুটি কাতরাচ্ছিল। দু'চোখে বেয়ে পানি ঝরছিল।
চোখে,মুখে ও পুরো শরীরের অনেকাংশে দাগ ও ক্ষতের চিহ্ন। বাবা ও সৎ মা
শিশুটিকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী নাঈমা আক্তার জুলিকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী সিটি হেলথ
ক্লিনিক নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটিকে দেখতে আসা শত শত
নারী পুরুষের দু'চোখে পানি চলে আসে। খবর পেয়ে ফেনী মডেল থানা পুলিশ
পাষান্ড পিতা জিয়া উদ্দিন ও তার স্ত্রী আসমা আক্তারকে গ্রেফতার করে থানায়
নিয়ে যায়। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাদেরকে লক্ষ্য করে পুলিশের গাড়ীতে জুতা
নিক্ষেপ ও তাদের মারধরের চেষ্টা চালায়। ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা(ওসি)-আমিনুল ইসলাম জানান,তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন
আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।