ফেনীতে বিষমুক্ত সবজি চাষে সাফল্য


ফেনীতে এই প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিষমুক্ত সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃসি অফিস সূত্রে জানা যায়, মাঠপর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের ফেরোমন ট্রাপ ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এসব প্রশিক্ষিত কৃষক সদর উপজেলার বিরলী , দক্ষিণ কাশিমপুর গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় চলতি মৌসুমে প্রায় ২০ একর জমিতে উৎপাদন করেছেন নানা ধরনের সবজি। যার মধ্যে রয়েছে পেঁপে, বেগুন, শসা, পটল, উচ্ছে, লাউ, চালকুমড়া ও কাঁকরোল। চাহিদা থাকায় বিষমুক্ত এসব সবজি প্রচলিত বাজার মূল্যের তুলনায় কৃষকরা মণপ্রতি ৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে পারছেন। অপরদিকে পোকা দমনে বিশেষ ফাঁদ ফেরোমন ট্রাপ ব্যবহারে কীটনাশকের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় সবজি চাষে কৃষকদের মুনাফা বেশি হচ্ছে। পাশাপাশি ভোক্তার স্বাস্থ্য সুরক্ষাও হচ্ছে।

ফেনীর বিষমুক্ত সবজির বিক্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ ক'জন নারী-পুরুষ সেখানে এসেছেন সবজি কেনার জন্য। বিক্রয়কেন্দ্রে থরে থরে সাজানো রয়েছে বেগুন, কাঁকরোল, শসা, চালকুমড়া, পটলসহ বিভিন্ন জাতের সবজি। একটি সাদা বোর্ডে এসব সবজির দাম সুনির্দিষ্টভাবে লেখা আছে। বোর্ডের তালিকা অনুযায়ী প্রতি কেজি বেগুন সেখানে ১৮ টাকা, পটল আট টাকা ও পেঁপে আট টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কেজি প্রতি ২০ টাকা দরে শসা, ১৩ টাকা দরে কাঁকরোলসহ প্রতিটি চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

সবজি কিনতে আসা আবদুল আজিজ বলেন, 'দোকানের বাইরে টানানো বিষমুক্ত সবজি বিক্রির ব্যানার দেখে গত দুই দিন ধরে আমি এখান থেকে সবজি কিনছি। সবজি কিনতে এসে প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেন কলেজ অধ্যক্ষ কাজী রিজভি জামান রিংকু, কলেজপাড়ার মাজেদুর রহমান, গৃহবধূ নাজমা বেগমসহ অনেকেই।

কৃষি কর্মকর্তারা আরো জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. সৈয়দ নুরুল আলমের পরামর্শে তাঁরা ইসডেপ কনসার্ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২০০৬ সাল থেকে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের দাবি, এ উদ্যোগের ফলে কৃষক ও জনস্বার্থ দুই ক্ষেত্রেই ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।