(১৫ নভেম্বর ২০১২) অদম্য মেধা দমাতে পারেনি ফেনীর শারীরিক প্রতিবন্ধী নাদিয়া পারভীন কুসুমকে। হাত ও পা বিকলাঙ্গ হয়েও মেধার জোরে প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি না হয়ে আট/দশ টা ছেলে মেয়ের মতো নিয়মিত স্কুলে ভর্তি হয়ে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে কুসুম। বিদ্যালয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও মা ফারিয়া ইয়াসমিনের অনুপ্রেরনায় পড়ালেখা শুরু করে কুসুম। তিন ভাই বোনের মধ্যে বড় কুসুম ধীরে ধীরে হাত ও পায়ের সমন্বয়ে লেখা শুরু করে। মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী কুসুম শিশু শ্রেনী থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত কোন শ্রেনীতেই মেধা তালিকার নিচে ছিলো না তার ফলাফল। প্রতিবারই তার রোল ছিল ৫ থেকে ৮ এর মধ্যে। ফেনী পৌরসভার মধুপুর এলাকার ছোট্র এক বাড়ীতে হুইল চেয়ারে বসে দৈনিন্দিন কাজকর্ম করলেও কাতার প্রবাসী বাবা নুর আহম্মদ মেয়ের জন্য ল্যাপটপ পাঠালে পড়ালেখার পাশাপাশি কুসুম অবসার সময় কাটান ল্যাপটপে ছবি একে। বাড়ী থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মায়ের কোলে চড়ে জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে কুসুম। দুই হাত ও দুই পায়ের নীচের অংশ খুবই সরু হওয়ায় ডানহাত ও বাম পায়ের সমন্বয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে কুসুম। চলতি বছর সে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বাড়ী থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মায়ের কোরে চড়ে কুসুম ফেনী সদর উপজেলার গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। জেএসসি পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ কুসুমকে ২০ মিনিট বেশি সময় দিলেও একহাত ও এক পায়ের সমন্বয়ে সবার মতো ব্যঞ্চে বসে তার আগেই খাতায় সব উত্তর লিখে উত্তরপত্র জমা দিচ্ছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী নাদিয়া পারভীন কুসুম জানান, স্বাভাবিক মানুষের মত সব কাজ করতে না পারলেও কিছু কিছু কাজ করতে পারে। স্বাভাবিক ভাবে চালাতে পারে ল্যাপটপও। বড় হয়ে চাকরি করার ইচ্ছা পোশন করে কুসুম। কুসুমের মা ফারিয়া ইয়াসমিন জানান, কুসুম জন্মগত ভাবে শারিরীক প্রতিবন্ধী। দুই হাত-দুইপায়ের নীচের অংশ খুবই সরু। ৩-৪ বছর বছর বয়স থেকে বই দেখলেই তাকিয়ে থাকতো। অন্যদের সাথে পড়তে চাইতো। মেয়েকে পাড়া লেখায় সাহায্য করার জন্য সর্বাত্বক চেষ্টা চালাচ্ছে। কম্পিউটারের উপর জোর দিয়ে তাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এটিএম শামছুল হক চৌধুরী জানান, পড়ালেখা ও পরীক্ষায় ভাল ভলাফলের জন্য স্কুলের সকল শিক্ষক নিয়মিত তাকে যত্ন নিচ্ছে। জেএসসির পাশাপাশি ভবিষ্যতে সে সকল পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করবে। পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক
-->