(২৫ জুলাই ২০১২) ফেনীতে বায়ু দূষণে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, প্রয়োজন সতর্কতা অবলম্বন। উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং ধূমপান আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বায়ু দূষণও। অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্প কলকারখানার ব্যাপক প্রসার, অতিরিক্ত কার্বন, সিসা প্রভৃতি যুক্ত হয়ে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ করছে বাতাসকে। এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে যে হারে বন নিধন হচ্ছে তাতে দূষণের মাত্রা আরও বেড়ে যাচ্ছে। বেশি বেশি বায়ু দূষণের কারণে অসচেতন জনসাধারণই রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে। বায়ু দূষণের ফলে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে। বাছু দূষণের ফলে রক্ত বহনকারী ধমনি ও শিরাতে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। ফলে উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, বায়ু দুষণের কারণে বায়ুতে বিদ্যমান কার্বন মনোঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং ধুলি কতা হার্টের অনেক ক্ষতি করে। এই ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে যায় আমাদের অজ্ঞতার কারণে। কেননা আমার কতটুকু দূষিত বাতাস গ্রহণ করছি তা জানি না। কিন্তু এই দূষিত বাতাস ঠিকই চুপিসারে হৃদরোগের ঝুঁকি এক থেকে তিন শতাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে। শিল্প ও কলকারখানার বিষ্ময়কর বৃদ্ধি, সংকীর্ণ রাস্তায় পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাতাসে ক্ষতিকারক গ্যাসগুলো মিশে ওজন স্তরে বড় বড় গর্ত তৈরি করছে। ফলে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি পৃথিবীতে আসছে এবং পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে গড় উষ্ণতা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে বৃক্ষ নিধন হচ্ছে এবং বায়ু দূষণ আরও বেড়ে যাচ্ছে। মানুষের বিভিন্ন ধরণের রোগও বেড়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কে কে আগারওয়াল জানান, ক্ষতিকারক আলট্রাভায়োলেট রশ্মি সূর্য থেকে আগত ভিটামিন ‘ডি’ কে শুষে নেয়। এজন্য ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বাছু দুষণের মাত্রা বেশি হলে হার্টে রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং ব্লক সৃষ্টি হয়।
চারটি উপায়ে বায়ু দুষণ আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এগুলো হলো:
১.রক্তচাপ বেড়ে যায়, তাহলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় এবং রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়ে যায়।
২. রক্ত ঘন বা জমাট বেঁধে যেতে পারে এবং রক্তে আঠালো ভাব বৃদ্ধি পেতে পারে।
৩. রক্ত বহণকারী ধমনির (আর্টারি) প্রচীর পুরো হয়ে যায়।
৪. দূষণ উচ্চ রক্তচাপের দিকে ধাবিত করে।
এত হতাশার মধ্যে ডা. আগারওয়াল আশার কথাও শুনিয়েছেন, তিনি বলেন, ‘সাধারণত কিছু ব্যায়াম এবং একটু সতর্কতা আপনাকে বায়ু দূষনের কারণে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে পারবে।’
পূর্ব সতর্কতা ও আপনার করণীয় :
১. বাসায় যখন থাকবেন তখন ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন। এমনকি রাস্তার গাড়ি নিয়ে বের হলে গাড়ির গ্যাস উঠিয়ে দিন।
২. যখন আপনার হৃদরোগজনিত সমস্যা দেখা দেবে তখন যতটা পারবেন পরিশোধিত বাতাস গ্রহণ করতে কিংবা ওই ধরণের পরিবেশের মধ্যে থাকবেন।
৩. এল্যার্জি প্রতিরোধে বাইরে থেকে এসে গোসল করতে হবে। এমনকি রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে গোসল করা ভালো।
৪. বাইরে থেকে এসে খুব ভালোভাবে নাক এবং হাত-পা-মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে যাতে ধুলোবালি জমে না থাকে।
৫. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম করে আপনার হার্ট ভালো রাখতে হবে।